দেশের ব্যাংকিং খাতে ডলারের সংকটের মধ্যে নভেম্বরে আমদানির জন্য লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) খোলার হার বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বরে এলসি খোলার পরিমাণ ৫.৭২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা অক্টোবরে ৫.৪২ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়েছে।
জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত মোট ২৭.৫৩ বিলিয়ন ডলার এলসি খোলা হয়েছে। যা ২০২২ সালের প্রায় একই সময়ে রেকর্ড করা ৩২.০৩ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি।
আগের অর্থবছরে মাসিক এলসি খোলার পরিমাণ ধীরে ধীরে কমে এসেছিল। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম মাসে নয় বিলিয়ন ডলার এলসি খোলা হয়েছিল। আগের অর্থবছরের শেষ মাসে তা ছিল চার বিলিয়ন ডলার।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের শুরুতে এলসি খোলার পরিমাণ আবার বাড়তে শুরু করে। অক্টোবরে ৫.৪২ বিলিয়ন ডলার, সেপ্টেম্বরে ৫.২৩ বিলিয়ন ডলার, আগস্টে ৬.১ বিলিয়ন ডলার ও জুলাইয়ে তা ৪.৩৭ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল।
গত ২৯ মাসে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে প্রায় ২৭ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে।
এর মধ্যে রয়েছে এ অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবরে ব্যাংকে বরাদ্দ করা ৫.৮ বিলিয়ন ডলার, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১৩.৫ বিলিয়ন ডলার ও ২০২১-২২ অর্থবছরে ৭.৬২ বিলিয়ন ডলার।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল নির্দেশিকা অনুসারে বাংলাদেশের মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৭ ডিসেম্বর ২১.৪৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে আসা সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক উভয়ের জন্য উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।
এর প্রাথমিক পরিণতির একটি হলো- এই কারণে বাংলাদেশী মুদ্রার উপর চাপ সৃষ্টি হয়েছে। মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন হয়ে বিনিময় মূল্য দাঁড়িয়েছে ১১০ টাকায়।
দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রক্ষা ও আমদানি সঙ্কট সমাধানে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ বাস্তবায়ন করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমদানিতে উচ্চ এলসি মার্জিন আরোপ করেছে, বিশেষ করে অপ্রয়োজনীয় ও বিলাসবহুল পণ্য আমদানি কঠিন করে তোলা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, এই পদক্ষেপের ফলে বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে। দেশের আমদানি অর্থ পরিশোধ ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১৫.৭৬% কমে ৬৯.৪৯ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। যা আগের বছরের একই সময়ের ৭৫.৪ বিলিয়ন ডলার থেকে কমেছে।