ভারতের হরিয়ানা রাজ্যে বন্দুকধারীদের চোরাগোপ্তা হামলায় ভারতীয় জাতীয় লোকদলের (আইএনএলডি) হরিয়ানা ইউনিটের সভাপতি ও সাবেক বিধায়ক নাফে সিং রাঠি এবং দলটির আরেক নেতা নিহত হয়েছেন।
রোববার সন্ধ্যায় রাজ্যের ঝাজ্জার জেলায় অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা তাদের বহনকারী গাড়ি লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে। এ ঘটনায় আরও দুইজন আহত হয়েছেন, তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ঘটনার সময় আইএনএলডি নেতা নিজ গাড়িতে করে তার বাহাদুরগড়ের বাড়িতে ফিরছিলেন। পথে বারাহির রেলক্রসিংয়ে এসে গাড়িটি থামতে বাধ্য হয়। ট্রেন আসায় ক্রসিংটি তখন বন্ধ ছিল।এ সময় কাছেই আরেকটি গাড়ি এসে থামে। এই গাড়ি থেকে পাঁচ ব্যক্তি নেমে এসে রাঠিকে বহনকারী এসইউভিটি লক্ষ্য করে গুলি শুরু করে। ঘটনাস্থলের রাঠি (৬৬) ও তার এক সহযোগী নিহত হন, গাড়িতে থাকা অপর দুইজন মারাত্মক আহত হন।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, পুলিশ একটি আই২০ গাড়ির খোঁজ করছে। হত্যাকারীরা এ গাড়িটি ব্যবহার করেছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।ওই এলাকার সিসিটিভির ফুটেজে দেখা গেছে, রাঠিকে বহনকারী গাড়িটি রেলওয়ে ক্রসিংয়ের দিকে এগোনোর সময় আই২০ গাড়িটি পিছু পিছু আসছিল। ওই একই ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, প্রায় ২০ মিনিট পর আই২০ গাড়িটি ফিরে যাচ্ছে। নিজের গাড়ির সামনের আসনে বসেছিলেন রাঠি। তার ভাতিজা গাড়িটি চালাচ্ছিলেন। গাড়ির পেছনের আসনে ছিলেন আইএনএলডির আরেক নেতা জয়কৃষাণ দালাল, তার পাশে ছিলেন রাঠির নিরাপত্তার জন্য নিয়োজিত গানম্যান।পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হত্যাকারীরা প্রায় ২০ রাউন্ড গুলি ছুড়েছে, এর অধিকাংশই রাঠিকে লক্ষ্য করে।
পুলিশ জানিয়েছে, হত্যাকারীরা নিজেদের কাজ সম্পন্ন করতে রেলক্রসিংয়ের সময়টিকে ব্যবহার করেছে। পেশাদার অপরাধীরা হামলাটি চালিয়েছে বলে ধারণা তাদের। আহতদের অবিলম্বে নিকটবর্তী ব্রহ্ম শক্তি সঞ্জীবনী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নিয়ে আসার পর চিকিৎসকরা রাঠি ও জয়কৃষাণকে মৃত ঘোষণা করেন।রাঠি বাহাদুরগড় আসন থেকে দুইবার হরিয়ান বিধানসভার নির্বাচিত বিধায়ক ছিলেন। তার হত্যাকাণ্ডের পেছনে ভারতের অন্যতম কুখ্যাত অপরাধী তিহার কারাগারে বন্দি লরেন্স বিষ্ণোই ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী কালা জাথেদি আছে বলে সন্দেহ পুলিশের।
এই হত্যাকাণ্ডের পর বিজেপি শাসিত হরিয়ানার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির তীব্র সমালোচনা করেছে বিরোধী দলগুলো। কয়েক মাস আগেই রাঠি তার নিরাপত্তার নিশ্চিতের জন্য সরকারের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছিলেন, কিন্তু তারপরও বিষয়টি আমলে নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ আইএনএলডির। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খাত্তারের সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছে কংগ্রেস ও আম আদমি পার্টি।