ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় দ্বিতীয় দফা যুদ্ধবিরতির সংলাপে যোগ দিতে মিশর যাচ্ছেন হামাসের চেয়ারম্যান ও রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়া।
বুধবার তিনি কাতার থেকে মিশরের রাজধানী কায়রোর উদ্দেশে রওনা হবেন। খবর এএফপির। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কায়রোতে হামাসের একটি উচ্চপর্যায়ে প্রতিনিধিদল এই সংলাপে অংশ নেবে এবং সেই দলটির নেতৃত্ব দেবেন হানিয়া। বৈঠকে মিশরের রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান আব্বাস কামেলসহ দেশটির উচ্চপর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিতি থাকবেন বলেও জানা গেছে।
মিশরের একটি সূত্রের বরাতে জানা গেছে, (ক) গাজায় আগ্রাসন ও অভিযান বন্ধ করা, (খ) ইসরাইলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তি এবং (গ) উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর গত ১৫ বছরের অবরোধের অবসান, (খ) হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্তি— এই চার ইস্যুতে আলোচনা হবে বৈঠকে।
গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের শীর্ষপর্যায়ের অধিকাংশ নেতা কাতার এবং মধ্যমপর্যায়ের নেতারা লেবাননে থাকেন। ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এবং হামাসযোদ্ধাদের মধ্যে টানা দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে যুদ্ধ চলার পর গত ২৫ নভেম্বর ৭ দিনের যে অস্থায়ী বিরতি ঘোষণা করা হয়েছিল, সেখানেও সক্রিয় ভূমিকা ছিল কাতার-মিশরের। সেই বিরতির আলোচনাও হয়েছিল মিশরে এবং তাতে হামাসপ্রধান উপস্থিত ছিলেন।
অস্থায়ী সেই বিরতির সময় নিজেদের হাতে থাকা জিম্মিদের মধ্যে থেকে ১১৮ জনকে মুক্তি দিয়েছিল হামাস। আর এই সময়সীমার মধ্যে ইসরাইলের বিভিন্ন কারাগার থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল দেড় শতাধিক ফিলিস্তিনিকে।
সেই হিসেবে গাজায় যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে এটি হানিয়ার দ্বিতীয় সফর। হামাসের একটি উচ্চপর্যায়ের সূত্র জানিয়েছে, এবারের কায়রো বৈঠকে মূলত তিনটি বিষয়ে গুরুত্ব দেবে গোষ্ঠীটির প্রতিনিধিদল। সেগুলো হলো (ক) গাজায় মানবিক সহায়তার সরবরাহ অব্যাহত রাখা, (খ) উপত্যকা থেকে ইসরাইলি সেনাদের প্রত্যাহার করা এবং (গ) ইসরাইলি বাহিনীর অভিযানে গাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের নিজ নিজ গ্রাম ও শহরে ফিরতে দেওয়া।
এদিকে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওস জানিয়েছে, হামাসের হাতে থাকা ইসরাইলিদের মুক্ত করতে সোমবার ইউরোপে বৈঠক করেছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মেদ বিন আবদুলরহমান আল থানি ইসরাইলের রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রধান নির্বাহী ডেভিড বার্নিয়া এবং মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর পরিচালক বিল বার্নস।মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে ইসরাইলের প্রধামন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘এ মুহূর্তে আমাদের প্রধান কর্তব্য (হামাসের হাতে থাকা) সব জিম্মিকে মুক্ত করা এবং এ ক্ষেত্রে আমরা সর্বপ্রকার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব।’