দেশের অন্যতম শিল্প প্রতিষ্ঠান প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওলিপুরে গড়ে তুলেছে অত্যাধুনিক ‘হবিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক’। গ্রামীণ এলাকার প্রতিষ্ঠিত এ পার্কে ৯ বছরে প্রায় ২৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।
এই শিল্প পার্কে বিনিয়োগ হয়েছে ৬ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। আগামী এক বছরে আরও ৬৮০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে গ্রুপটি। ফলে নতুন করে আরও ৩ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। তখন এ শিল্প পার্কে কর্মী সংখ্যা বেড়ে প্রায় ২৮ হাজারে দাঁড়াবে।
বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) হবিগঞ্জ শিল্প পার্কে অর্থনীতি-বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সঙ্গে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানান প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের বিপণন পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল।
তিনি আরও বলেন, প্রায় ৩০০ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত শিল্প পার্কটির নির্মাণ নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১১ সালে। ২০১৩ সালে উৎপাদন শুরু হলেও আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয় ২০১৪ সালে। এখন কর্মরত লোকবলের ৮০ ভাগই স্থানীয়। এছাড়া কর্মীদের ৬৫ ভাগই নারী। বর্তমানে শিল্প পার্কটিতে ৪৭টি প্রোডাকশন লাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের পণ্য উৎপাদিত হচ্ছে। শিল্প পার্কটি স্থাপনের ফলে এ অঞ্চলের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটছে। বিশ্বে ১৪৫টি দেশের ১৫০ কোটি লোক প্রাণ-আরএফএলের পণ্য ব্যবহার করছেন। বাংলাদেশে শতকরা ৯৫ শতাংশ পরিবার প্রাণের পণ্য ব্যবহার করে।
গ্রুপের ব্যাংক ঋণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঋণ আছে তবে এখন পর্যন্ত এক দিনের জন্যও ঋণ খেলাপি হয়নি প্রাণ-আরএফএল।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন ইআরএফ সভাপতি দ্য ডেইলি স্টারের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহ মীরধা, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের জেনারেল ম্যানেজার (জনসংযোগ) তৌহিদুজ্জামান প্রমুখ।
প্রাণ-আরএফএলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য, প্লাস্টিক, হালকা প্রকৌশল পণ্য, টয়লেট্রিজ, ফার্নিচার, নন-লেদার আইটেম, মেডিকেল অ্যাপ্লায়েন্সসহ নানা ধরনের পণ্য উৎপাদনের জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে শিল্প পার্ক ও কারখানা গড়ে তুলেছে।
এরই অংশ হিসেবে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার অলিপুরে গড়ে তোলা হয়েছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের সবচেয়ে বড় স্থাপনা হবিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক।
জ্বালানি ও ভূমির সহজলভ্যতা, প্রতিবেশী দেশে পণ্য রপ্তানি এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের বিষয়টি বিবেচনা করে এ পার্কটি স্থাপন করা হয়েছে।
হবিগঞ্জের অলিপুর ছিল অত্যন্ত অবহেলিত এলাকা। এখানকার মটি ছিল অনুর্বর, কৃষিকাজ করা সম্ভব ছিল না। ফলে এখানে কর্মসংস্থানের সুযোগ ছিল খুবই কম। এটিকে বিবেচনায় নিয়ে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত দেশের ব্যবসায়ীদের এ অঞ্চলে শিল্প কারখানা গড়ে তোলার আহ্বান জানান এবং শিল্পকারখানায় গ্যাস সরবরাহের ব্যবস্থা করেন।
সুত্র: উত্তরণবার্তা