এক সময় টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের নাম্বার ওয়ান বোলার ছিলেন ইমাদ ওয়াসিম।
বেশ অনেকটা সময় জাতীয় দলের বাইরে থাকলেও টিম ম্যানেজমেন্টের বিবেচনায় যে ভালোভাবেই ছিলেন সেটিরও আভাস মিলছিল বোর্ডের তরফে। তবুও গেল নভেম্বরে আচমকা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলে দেন পাকিস্তানের তারকা এই ক্রিকেটার। নতুন খবর, মাস দুয়েকের ব্যবধানে এবার অবসর ভেঙে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছেন স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার। সম্প্রতি দেশটির একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমন ইঙ্গিত মিলেছে।
পাকিস্তানের জার্সিতে সবমিলিয়ে ১২১টি ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলেছেন ইমাদ ওয়াসিম। বয়সভিত্তিক দলে ছিলেন অধিনায়কও। সবশেষ ম্যান ইন গ্রিনদের হয়ে তাকে দেখা গিয়েছিল গেল বছরের এপ্রিলে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের মাটিতে টি-টোয়েন্টি সিরিজে দলে ছিলেন তিনি। তবে শেষ ওয়ানডে খেলেছেন আরও বেশ কয়েক বছর আগে।
গেল নভেম্বরে এক এক্স বার্তায় অবসরের ঘোষণায় ইমাদ বলেন, ‘গত কয়েক দিনে আমার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার নিয়ে অনেক ভেবেছি। এরপর এই সিদ্ধান্তে এসেছি যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার এটিই সঠিক সময়। অনেক বছর ধরেই সহায়তা করার জন্য পিসিবিকে ধন্যবাদ দিতে চাই। পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করা সত্যিই সম্মানের।’
এবার সুর বদলালেন ইমাদ। পাকিস্তানের একটি গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জাতীয় দলে ফেরার আভাস দিয়ে তিনি বলেন,‘আমি শতভাগ নিশ্চিত হয়েই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। দিন শেষে এটা আমারই সিদ্ধান্ত। কিন্তু আপনি কখনো জানেন না, পাকিস্তানের কখন আপনাকে প্রয়োজন হবে।’ আরও যোগ করেন, ‘অবসর নেওয়া দোষের কিছু নয়। মানসিকভাবে পুরোপুরি না থাকাটাও দোষের কিছু নয়। আমি সব জায়গায় ক্রিকেট খেলে যাচ্ছি। অবসরের আগেও খেলতাম। আশা করছি, সামনে ভালো কিছু হবে।’
অবশ্য দলে ফেরার জন্য একটি শর্তও দিয়ে রাখলেন তিনি। ইমাদ বলেন, ‘আমি আমার ভূমিকা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা চাই। এটা আমাকে দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়, একজন অধিনায়ক হিসেবেই নয়, সিনিয়র খেলোয়াড় হিসেবেও। দলকে আমি যেখানে নিয়ে যেতে চাই, সেখানে নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হোক, সিনিয়র খেলোয়াড়রা দলকে কোথায় নিয়ে যেতে চায়। পাকিস্তান সঠিক ক্রিকেট খেলুক, এটাই আমি চাই, ঠিক সমন্বয় আর ঠিক কৌশলে খেলুক।’
২০১৫ সালে লাহোরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি দিয়ে পাকিস্তানের হয়ে আন্তর্জাতিক অভিষেক হয় ইমাদ ওয়াসিমের। ওই বছরই কলম্বোতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলেন অভিষেক ঘটে ওয়ানডে ফরম্যাটে। দ্রুতই নিজেকে করে ফেলেন সাদা বলের ক্রিকেটের অপরিহার্য এক নাম। বাঁহাতি স্পিনের পাশাপাশি লোয়ার অর্ডারের ব্যাটিংয়েও বেশ কার্যকর ছিলেন ইমাদ।
৬৬টি টি-টোয়েন্টিতে ৬৫টি উইকেট নেওয়ার সঙ্গে করেছেন ৪৮৬ রান। ছিলেন শর্টার ফরম্যাটের নাম্বার ওয়ান বোলার। এছাড়া ৫৫ ওয়ানডের ক্যারিয়ারে তার উইকেট ৪৪টি, পাশাপাশি ৪২.৮৬ গড়ে ৯৮৬ রানও আছে তাঁর। ২০১৭ সালে পাকিস্তানের হয়ে জিতেছেন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপাটাও।
২০১৬ ও ২০২১ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সঙ্গে ২০১৯ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলেছিলেন ইমাদ। অনেকের মতেই বাবর আজম দলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পরেই নিজের জায়গা হারিয়ে ফেলেছিলেন এক সময়ের দুর্দান্ত এই অলরাউন্ডার। নিজের পছন্দের ক্রিকেটারদের জায়গা দিতে গিয়ে ইমাদের স্থান নষ্ট করেছেন বাবর, এমন অভিযোগ প্রায়ই শোনা যায় পাকিস্তান ক্রিকেটের ভক্তদের মাঝে।