কাতার বিশ্বকাপের দুঃস্বপ্ন ধীরে ধীরে ভুলতে বসেছিল পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। ২০২৬ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার সঙ্গে তাদের সুষম প্রতিযোগিতা ছিল পয়েন্ট টেবিলে। ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে ড্র তাদের সেই দৌড়ে ‘দাড়ি’ টেনে দেয়, এরপর পেরুর বিপক্ষেও সেলেসাওরা ২-০ গোলের হার নিয়ে মাঠ ছেড়েছে। তবে এরচেয়েও বড় দুশ্চিন্তার বিষয়– হাঁটুর চোট নিয়ে ম্যাচটি থেকে নেইমার জুনিয়রের ছিটকে যাওয়া। যা বড় ধাক্কা হিসেবে এসেছে ব্রাজিল শিবিরে!
দীর্ঘ ৭ মাস মাঠের বাইরে কাটানো নেইমার উরুগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচের ৪৫ মিনিটে চোটে পড়েন। প্রতিপক্ষের নিকোলাস ডে লা ক্রুজের করা ফাউলের শিকার হন তিনি। মাঠে কয়েক মিনিট প্রাথমিক চিকিৎসার পর স্ট্রেচারে করে বাইরে নিয়ে যাওয়া হয় ৩১ বছর বয়সী এই তারকা ফরোয়ার্ডকে। চোট এতটা গুরুতর ছিল যে, হাত দিয়ে চোখ ঢেকে তিনি কাঁদতে কাঁদতে নেইমার মাঠ ছেড়েছেন। এরপর তার বদলি হিসেবে মাঠে নামানো হয় রিচার্লিসনকে। নেইমারের লিগামেন্টের ক্ষতি হয়েছে কিনা, জানতে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হবে।
ব্রাজিল টিমের ডাক্তার রদ্রিগো লাসমার জানিয়েছেন, ‘এখনই নেইমারের ইনজুরি কতটা গুরুতর সেটি বলা যাচ্ছে না। আমরা সব ধরনের পরীক্ষা করছি, আগামীকালও একই পরীক্ষাগুলো করা হবে। তার হাঁটুর পরবর্তী অবস্থা দেখা হবে আগামী ২৪ ঘণ্টা পরে। তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে, দেখি কী আসে পরবর্তী পরীক্ষায়।’
নেইমার মাঠ ছাড়ার আগেই ব্রাজিল এদিন পেরুর কাছে এক গোলে পিছিয়ে পড়ে। তবে তিনি মাঠ ছাড়তেই আরও ভঙ্গুর দশা দেখা যায় ব্রাজিলের আক্রমণভাগ ও রক্ষণে। বেশকিছু আক্রমণ শাণালেও তারা গোল হওয়ার মতো অবস্থায় পৌঁছাতে পারেনি। ৬৯ মিনিটে রদ্রিগোর নেওয়া একটা ফ্রি-কিক পেরুর গোলবারে লেগে বাইরে চলে যায়। এছাড়া আর বলার মতো কিছু করতে পারেননি ভিনিসিয়ুস-রদ্রিগো-রিচার্লিসন ও গ্যাব্রিয়েল জেসুসরা। ৭৭ মিনিটে উল্টো আরেকটি গোল খেয়ে পরাজয় নিশ্চিত করে ব্রাজিল।
ম্যাচ শেষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে নেইমার একটি স্টোরি দিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেন, ‘সৃষ্টিকর্তা সব বিষয়ে জানেন। সকল শ্রদ্ধা ও কৃতিত্ব একমাত্র তোমার, আমার স্রষ্টা। যাই ঘটুক, আমি তোমার ওপরই আস্থা রাখি।’
এর আগে পিএসজিতে থাকাকালে অ্যাঙ্কলের চোটে পড়ে সাতমাসের জন্য মাঠের বাইরে চলে যান নেইমার। তাদের হয়ে আর আনুষ্ঠানিক ম্যাচে নামা হয়নি তার। এরপর সর্বশেষ ট্রান্সফার মৌসুমে ব্রাজিলের পোস্টারবয় ইউরোপ ছেড়ে যোগ দেন সৌদি আরবের ক্লাব আল-হিলালে। মাঠে ফিরেই তিনি ব্রাজিলের হয়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচে সর্বোচ্চ গোলদাতা বনে যান। ছাড়িয়ে যান স্বদেশি কিংবদন্তি ফুটবলার পেলেকেও। ২০১০ সালে জাতীয় দলে অভিষেকের পর থেকে এখন পর্যন্ত ১২৮ ম্যাচে নেইমারের গোলসংখ্যা ৭৯টি।