বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ১৩তম আসরে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৩৭ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। আজ মঙ্গলবার ধর্মশালায় অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে ডেভিড ম্যালানের সেঞ্চুরি ও বেয়ারস্ট্রো-রুটের জোড়া ফিফটিতে ইংলিশদের দেয়া ৩৬৫ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে লিটন-মুশফিকের ফিফটিতে টাইগারদের ইনিংস ৪৮.২ ওভারে ২২৭ রানে গুটিয়ে যায় ।
ওপেনিংয়ে নেমে লিটন দাস সর্বোচ্চ ৬৬ বলে ৭৬ রান করেন। রিস টপলি সর্বোচ্চ ৪ টি উইকেট নেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মঙ্গলবার টাইগার বোলার এবং ব্যাটাররা নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেনি। বোলাররা শুরুতে ভাল বল করতে না পারলেও ডেথ ওভারে ৬৬ রানে ৬ উইকেট তুলে নেয়ায় শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেট হারায় ইংলিশরা। লিটন,মুশফিক এবং হৃদয় ছাড়া অন্য ব্যাটাররা ভাল ব্যাট করতে পারেনি।
মঙ্গলবার ধর্মশালায় ইংল্যান্ডের দেয়া ৩৬৫ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই ক্রিস ওকসকে তিনটি চার মেরে লড়াইয়ের আভাস দেন লিটন। কিন্তু পরের ওভারে পরপর দুই বলে তানজিদ তামিম ও ইনফর্ম নাজমুল হাসান শান্ত ফিরে গেলে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। এরপর ৯ বল খেলে টপলির তৃতীয় শিকার হয়ে মাত্র ১ রান করে ফিরে যান অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও।
২৬ রানে তিন উইকেট হারানো টাইগাররা দলীয় পঞ্চাশ রানের আগেই হারায় আফগানদের বিপক্ষে ম্যাচসেরা হওয়া মিরাজকে। ছয়ে নামা মুশফিককে সঙ্গে নিয়ে ইনিংস মেরামতের পাশাপাশি দ্রুত কিছু রানও তুলে নেন সহ অধিনায়ক লিটন। ৩৮ বলেই ক্যারিয়ারের একাদশ ফিফটি তুলে নেয়া লিটন ফেরেন ৬৬ বলে ৭ চার ও ২ ছয়ে ৭৬ রান করে।
লিটনের বিদায়ের পর হৃদয়কে নিয়ে পার্টনারশিপ গড়েন মুশফিক। ক্যারিয়ারের ৪৭তম ফিফটি তুলে আউট হওয়ার আগে ৬৪ বলে ৪ চারে তিনি করেন ৫১ রান। দলীয় ১৯৭ রানের মাথায় লিভিংস্টনের বলে বাটলারের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরার আগে হৃদয় করেন ৬১ বলে ২ চারে ৩৯ রান। এছাড়া শেখ মাহেদি আদিল রাশিদের বলে বোল্ড হন ১৪ রানের মাথায়। শরিফুল ফেরেন ১২ রান করে।
এর আগে টসে জিতে বোলিং নিয়ে দুই প্রান্ত দিয়ে পেস দিয়েই আক্রমণ শুরু করেন সাকিব। তবে টাইগার বোলারদের পাত্তাই না দিয়ে মাত্র ১৫.৩ ওভারেই একশ রানের জুটি গড়ে ফেলেন দুই ওপেনার জনি বেয়ারস্ট্রো ও ডেভিড ম্যালান। গত ম্যাচের মতই ইংল্যান্ডের ম্যাচেও ওপেনিং জুটি ভাঙেন সাকিব। ৫৯ বলে ৮ বাউন্ডারিতে ৫২ রান করা বেয়ারস্টোকে দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করেন টাইগার অধিনায়ক। ১১৫ রানে আসে ইংল্যান্ডের উদ্বোধনী জুটি থেকে।
তবে দ্বিতীয় উইকেটে আরেকটি বড় জুটি গড়ে ফেলে ইংলিশরা। ১১৭ বলেই ১৫১ রান তুলে ফেলেন জো রুট এবং ম্যালান। ৯৩ বলে সেঞ্চুরি করা ম্যালানকে ১৪০ রানের মাথায় বোল্ড করে এই জুটিটি ভাঙেন শেখ মেহেদি। তার ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসটিতে ছিল ১৬ চারের সঙ্গে ৫টি ছক্কার মার।
এরপর ৩৯তম ওভারে শরিফুলের ইসলাম তুলে নেন ১০ বলে ২০ রান করা জস বাটলারকে। পরের ওভারে হ্যাটট্রিকের সুযোগও তৈরি করেন শরিফুল। পরপর দুই বলে তিনি সাজঘরে ফেরান জো রুট আর লিয়াম লিভিংস্টোনকে। ৬৮ বলে ৮২ রানের ইনিংসে ৮টি চার আর একটি ছক্কা হাঁকান ইংলিশ এই তারকা ব্যাটার। এছাড়া লিভিংস্টনকে প্রথম বলেই সরাসরি বোল্ড করেন এই পেসার।
শেষদিকে এরপর হ্যারি ব্রুক, স্যাম কারান ও আদিল রশিদকে ফেরান শেখ মেহেদি। ইনিংসরে শেষ ওভারে তাসকিন আউট করেন ক্রিস ওকসকে। ৮ ওভারে ৭১ রান দিয়ে ৪টি উইকেট নেন শেখ মেহেদি। ১০ ওভারে ৭৫ রানে ৩ উইকেট শরিফুলের। তাসকিন ৬ ওভারে ৩৮ রানে একটি এবং সাকিব ১০ ওভারে ৫৮ রানে নেন একটি উইকেট।