জাতীয় নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করে সংসদে হইচই ফেলে দিয়েছেন বিরোধীদলীয় নেতা জি এম কাদের।
সংসদে গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোথাও কোথাও ফলাফল পূর্বনির্ধারিত ছিল। ফলাফলের ‘শিট’ আগেই বানিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
মঙ্গলবার (৬ মার্চ) সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনা ও দ্বাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে জি এম কাদের এসব অভিযোগ করেন।
সংসদে জি এম কাদেরের এমন বক্তব্যের সময় সরকারি দলের ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা কয়েক দফা হইচই করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
এছাড়া তার বক্তব্যের সময় সংসদে হইচইয়ের জবাবে বেশির ভাগ সময় তাকে হাসতে দেখা গেছে। তবে তার বক্তব্যে নির্বাচন, দুর্নীতি, ব্যাংক খাত, বাজার সিন্ডিকেটসহ বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের কড়া সমালোচনা করেন জাতীয় পার্টির এই চেয়ারম্যান।
জি এম কাদের বলেন, এবারের নির্বাচন তিন ধরনের নির্বাচন হয়েছে। কোনো কোনো এলাকায় নির্বাচন শতভাগ সুষ্ঠু হয়েছে। সেখানে সরকারের সদিচ্ছা ছিল। তবে সেখানে প্রতিযোগিতাহীন নির্বাচন হয়েছে। ওই আসনগুলোতে কোনো শক্ত প্রার্থী ছিল না। এছাড়া সেখানে ভোটারের উপস্থিতিও কম ছিল।
দ্বিতীয়টি হয়েছে ‘ফ্রি স্টাইল’। সেখানে অর্থ ও পেশিশক্তির অবাধ ব্যবহার হয়েছে। সেখানে সরকারি দল, বিদ্রোহী প্রার্থী ও জাতীয় পার্টির শক্ত প্রার্থী ছিল। তৃতীয় হলো, নির্বাচন যেভাবেই হোক, ফলাফল পূর্বনির্ধারিত ছিল এবং শিট বানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এবারের নির্বাচনে ৪২ শতাংশ ভোট পড়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ৪২ শতাংশ ভোট পড়তে হলে সব ভোটকেন্দ্রের সামনে আট ঘণ্টা লাইন থাকার কথা। কিন্তু তা ছিল না।
এদিন জাপা চেয়ারম্যানের এমন বক্তব্যে অন্য সংসদ সদস্যরা হইচই শুরু করেন। তখন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হককে বলতে শোনা গেছে, ‘শুনেন না! ধৈর্য ধরেন।’
তিনি বলেন, দেশের অধিকাংশ মানুষ মনে করেন, এবার ভালো নির্বাচন হয়নি। সঠিকভাবে জনমতের প্রতিফলন হয়নি। নির্বাচনে আইনকানুন ব্যাপকভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুটি দলের একটি না এলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করা কঠিন দাবি করে সংসদে বিরোধীদলীয় এই নেতা বলেন, সব দল যদি নির্বাচনে আসে এবং বাধাশূন্যভাবে ভোট হয়, সেখানে ১৫ শতাংশ ভোট হলেও তা গ্রহণযোগ্য।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি বললেন, নির্বাচনে জয় হয়েছে জনগণের গণতন্ত্রের। কিন্তু দেশের বেশির ভাগ মানুষ এ কথার সঙ্গে একমত নন।
দেশে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে জি এম কাদের অভিযোগ করে বলেন, নির্দিষ্ট কিছুসংখ্যক ব্যক্তি পণ্য আমদানি করছেন। এতে সিন্ডিকেট হওয়াটাই স্বাভাবিক। এসব ব্যবসায়ী সরকারের নীতিনির্ধারণে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত আছেন। সরকারের কাছে বিকল্প না থাকায় সরকার তাদের হাতে জিম্মি।