ফখরুল বলেন, আমরা জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করি। সেজন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি। আল্লাহ যেন তাকে (খালেদা জিয়া) সুস্থ করেন এবং তিনি যেন আবার আমাদের মাঝে থেকে লড়াই-সংগ্রাম করতে পারেন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “গত কিছুদিন আমরা তাকে (খালেদা জিয়া) দেখছি, তার অসুস্থতার বিষয়ে কথা বলে যাচ্ছি; আন্দোলন করছি। আমরা জানি, ভয়াবহ এই ফ্যাসিস্ট সরকার খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করবে না। কারণ, দুঃখজনক হলেও সত্য, তারা (সরকার) তাকে হত্যা করতে চায়। তাকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে চায়, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে।”
বুধবার (৪ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির “বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিলে” এসব কথা বলেন তিনি।
ফখরুল বলেন, “এ দেশের গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকারকারী, যিনি রাজপথে সবচেয়ে বেশি সংগ্রাম করেছেন। যিনি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে স্বৈরাচারকে পরাজিত করেছেন। এখন তিনি (খালেদা) অসুস্থতা নিয়ে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে চলেছেন, আমাদের অনুপ্রাণিত করেছেন। তার রোগমুক্তির জন্য আমরা দোয়া করেছি। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, আল্লাহ যেন তার হায়াত বাড়িয়ে দেন। একইসঙ্গে যেন তার চিকিৎসার সুযোগ করে দেন।”
তিনি বলেন, “আমরা জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করি। সেজন্য আল্লাহর কাছেই আমরা প্রার্থনা করি। আল্লাহ যেন তাকে (খালেদা জিয়া) সুস্থ করেন এবং তিনি যেন আবার আমাদের মাঝে থেকে লড়াই-সংগ্রাম করতে পারেন।”
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম (বীর প্রতীক) বলেন, “দেশের মা, গণতন্ত্রের মা খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ। তাকে পরিকল্পিতভাবে অসুস্থ করা হয়েছে, মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।’
গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, “৭৮ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ৷ তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। একজন প্রধানমন্ত্রী আরেকজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যু কামনা করছেন। এটি খুবই বিকৃত রুচির।”
প্রসঙ্গত, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালে কারাগারে যান। দেশে কোভিড মহামারি শুরু হলে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ খালেদা জিয়াকে নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার। এরপর থেকে তিনি গৃহবন্দী অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।
৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া কিডনি, ফুসফুস, হৃদরোগ ও লিভার জটিলতায় ভুগছেন। প্রায়ই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। কয়েক বছর ধরে বিএনপি খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসা করানোর দাবিতে আন্দোলন করছে। তবে সরকার বলছে, খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করানোর কোনো আইনি সুযোগ নেই।
সবশেষ গত ৯ আগস্ট রাতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকে তিনি সেখানেই আছেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছে।
মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা নিয়মিত তার স্বাস্থ্য চেকআপ করছেন। এর মধ্যে দুইবার কেবিন থেকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেওয়া হয়েছে তাকে। চিকিৎসকেরা বলছেন, খালেদা জিয়ার জন্য যে চিকিৎসার দরকার তা দেশে নেই। এ জন্য তাকে বিদেশে নেওয়া জরুরি।