মার্কিনিদের মুখে মানবাধিকারের কথা শোভা পায় না। ওরা অন্য দেশের নির্বাচন নিয়ে মাতব্বরি করছে কিন্তু নিজের দেশের অবস্থা টালমাটাল
ভিসানীতি বা বিএনপির আন্দোলনকে কোনো চ্যালেঞ্জ মনে করেন না ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।
তার ভাষ্যে, “বর্তমানে বড় চ্যালেঞ্জ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও ডেঙ্গুর বিস্তার রোধ। এসব বিষয়ে কাজ করা হলে জনগণের অসন্তোষ দূর হবে। জনগণ নিজ দায়িত্বে শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করবে।”
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দলের এক সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
ভিসানীতির সমালোচনা করে মেনন বলেন, “মার্কিনিদের মুখে মানবাধিকারের কথা শোভা পায় না। ওরা অন্য দেশের নির্বাচন নিয়ে মাতব্বরি করছে কিন্তু নিজের দেশের অবস্থা টালমাটাল। বাংলাদেশের জনগণই বাংলাদেশের নির্বাচন নির্ধারণ করবে।”
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে টিসিবির সরবরাহ বৃদ্ধির দিকে নজর দিতে আহ্বান জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে দুই ভাগে বিভক্ত দলগুলো। বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে আন্দোলন করছে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তাদের জোট বর্তমান সরকারের অধীনে সংবিধান মেনে নির্বাচন অনুষ্ঠানে অনড় অবস্থানে রয়েছে।
এরমধ্যে বাড়তি চাপ তৈরি করেছে বৈদেশিক শক্তিগুলোর তৎপরতা। কূটনৈতিক তৎপরতার দিক থেকে প্রধান ভূমিকা নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিনষ্ট ও সুষ্ঠু ভোটে যারা বাঁধা দেবেন তাদের ওপর ভিসানীতি প্রয়োগের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
গত ২৪ মে বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। তাতে বলা হয়, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনপ্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বাংলাদেশিদের ভিসা দেবে না দেশটি। এরপর ২২ সেপ্টেম্বর এক বিবৃতিতে বাংলাদেশে বিধিনিষেধ আরোপের কথা জানায় যুক্তরাষ্ট্র।
ভিসানীতি কার্যকরের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলে আসছে, তারা ভিসানীতি ও নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা করে না। দেশে সংবিধান মেনেই নির্বাচন হবে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কথাও বলেছেন ক্ষমতাসীন দলের কেউ কেউ।
আর মাঠের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ভিসানীতিকে “অনেকটা স্বাগত” জানালেও বলছে, ভিসানীতি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের জন্য লজ্জাজনক। এর জন্য দায়ী বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, বাংলাদেশ সরকারের উচিত ভিসানীতিকে গুরুত্ব দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। তা না-হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।