ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।
টানা তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে চালানো এই হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ২৩ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। বর্বর এই আগ্রাসনের জেরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে ক্ষোভ।
এমন অবস্থায় যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেছেন, ইসরায়েল হয়তো গাজায় আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করছে। আর এতে ‘উদ্বিগ্ন’ তিনি। বুধবার (১০ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডেভিড ক্যামেরন বলেছেন- তিনি ‘চিন্তিত’ যে ইসরায়েল হয়তো গাজায় আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করতে পারে। ব্রিটিশ এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, যুদ্ধের ঘটনা নিয়ে তিনি নিয়মিত সরকারি আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করেন। কিন্তু আইনি পরামর্শ অনুযায়ী ইসরায়েল বেআইনিভাবে কাজ করেছে কিনা তা বলতে রাজি হননি তিনি।
ক্যামেরন জোর দিয়ে বলেছেন, ব্রিটিশ সরকার ইসরায়েলের প্রতি সমর্থনের কোনও পরিবর্তন করেনি।
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। নির্বিচার এই হামলায় ২৩ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ইসরায়েলি হামলায় আরও ৫৯ হাজার ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।
সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকা বলেছে, গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এ লক্ষ্যে ইসরায়েলকে জবাবদিহি করতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে আফ্রিকার এই দেশটি। তবে ক্যামেরন বলেছেন, তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার এই দাবির সঙ্গে একমত নন।
হাউস অব লর্ডসে বক্তৃতা দেওয়ার সময় সাবেক এই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন: ‘আমি মনে করি না এটি সহায়ক, আমি এর সাথে একমত নই, আমি মনে করি না এটি সঠিক’। এসএনপি সংসদ সদস্য ব্রেন্ডন ও’হারার সাথে উত্তেজনাপূর্ণ বিতর্কের সময় ক্যামেরন বলেন, তিনি সংকটের সময় কিছু জিনিসকে ‘গভীরভাবে উদ্বেগজনক’ হিসেবে দেখেছেন, তবে নিজের দেশের পদক্ষেপের সরাসরি সমালোচনা করেননি তিনি।
এসময় গাজায় আরও মানবিক সাহায্যের প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার এবং উত্তর গাজায় পানি সরবরাহ ফের শুরু করতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানান ক্যামেরন। কিন্তু ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে বলে কোনও আইনি পরামর্শ পেয়েছেন কিনা, বারবার এমন প্রশ্ন তুললেও ক্যামেরন বলেন, ‘আমি এই প্রশ্নের উত্তর দিতে চাই না’।
তিনি বলেন: ‘আপনি যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করেন যে, ইসরায়েল এমন সব পদক্ষেপ নিয়েছে যেটাতে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন হতে পারে; এসব বিষয়ে আমি উদ্বিগ্ন কিনা? হ্যাঁ, অবশ্যই আমি এটি নিয়ে চিন্তিত এবং সেই কারণেই অস্ত্র রপ্তানির বিষয়ে পরামর্শ দেওয়ার সময় আমি পররাষ্ট্র দপ্তরের আইনজীবীদের সাথে পরামর্শ করি।’
তবে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, সরকারি আইনজীবীরা আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করার বিষয়ে কোনও ইঙ্গিত দেননি।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ডাউনিং স্ট্রিট পরে জানায়, ইসরায়েলকে ‘সতর্কতার সাথে কাজ’ করতে হবে এবং হামাসের সাথে চলমান যুদ্ধ আরও ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি এড়াতে হবে।