ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সর্বকালের সর্বোচ্চ অবস্থায় পৌঁছেছে।
গত ২৯ মার্চ শেষ হওয়া সপ্তাহে প্রতিবেশী এই দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে প্রায় ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
আর এতেই দেশটির রিজার্ভ ৬৪৫.৬ বিলিয়ন বা ৬৪ হাজার ৫৬০ কোটি মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। যা ভারতের ইতিহাসে সর্বকালের সর্বোচ্চ।
ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার পরিসংখ্যানে এই তথ্য সামনে এসেছে বলে গত শুক্রবার (৫ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমস।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৯ মার্চ পর্যন্ত ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সর্বকালের সর্বোচ্চ পরিমাণে বেড়ে ৬৪৫.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। গত শুক্রবার মুদ্রানীতি কমিটির গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো ঘোষণা করার সময় রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার গভর্নর শক্তিকান্ত দাস একথা জানিয়েছেন।
সর্বশেষ পরিসংখ্যানে আগের তুলনায় রিজার্ভ বেড়েছে ২.৯৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এমনকি গত ৫ সপ্তাহ ধরে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ অব্যাহতভাবে বেড়ে চলেছে বলেও জানিয়েছে রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, লোকসভা ভোটের প্রচারে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ নিয়ে মোদি সরকারকে বিরোধীরা যখন বার বার আক্রমণ করছে, তখন সর্বকালের সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছাল ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ।
গত ২৯ মার্চ শেষ হওয়া সপ্তাহে ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২.৯৫১ বিলিয়ন ডলার বেড়ে হয়েছে ৬৪৫.৫৮৩ বিলিয়ন ডলার। যা এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ। মূলত গত ৫ সপ্তাহ ধরেই অব্যাহতভাবে দেশটির রিজার্ভ বেড়ে চলেছে।
রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার গভর্নর শক্তিকান্ত দাস জানিয়েছেন, ‘প্রতিকূল আর্থিক পরিবেশে খরচ করার জন্য এখন বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার শক্তিশালী করা দরকার।’
মূলত যে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ যত বড় হয় সেই দেশের অর্থনৈতিক স্থিরতা তত বেশি বলে মনে করা হয়ে থাকে। আন্তর্জাতিক স্তরে অর্থনৈতিক ওঠা-নামার প্রভাব সেই দেশের ওপর তত কম পড়ে।
আরবিআই-এর তথ্য বলছে, এর আগে গত ৫ সপ্তাহে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে ২৬.৫ বিলিয়ন ডলার। গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে এই বৃদ্ধির পরিমাণ ছিল ১৪০ মিলিয়ন ডলার।
গভর্নর শক্তিকান্ত দাস জানিয়েছেন, ‘বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে শক্তিশালী করা আমাদের অন্যতম উদ্দেশ্য। প্রতিকূল আর্থিক পরিবেশে তা আমাদের সহযোগিতা করবে।’
এর আগে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছিল। তখন দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডারে মজুত ছিল ৬৪২.৪৫৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
তবে তার পর থেকে আন্তর্জাতিক নানা ঘটনায় ভারতের অর্থনীতিকে স্থির রাখতে বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করতে হয়েছে রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়াকে।
প্রসঙ্গত, জ্বালানি তেলসহ বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য আমদানি করতে ভারতকে বিপুল পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করতে হয়। যার জেরে প্রভাব পড়ে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে।
সেই সমস্যার সমাধানে করোনা মহামারি চলাকালীন বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে ভারতীয় মুদ্রায় লেনদেন শুরু করে ভারত। তার মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশের পাশাপাশি রয়েছে বাংলাদেশও।