২০১৯ সালের পর প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছিল বার্সেলোনা।
কিন্তু দুর্দান্ত ছন্দে ফেরা কিলিয়ান এমবাপ্পে আর তিন লাল কার্ড দেখানো রেফারি ইস্তভান কোভাকস যেন ছিটকে দিলেন বার্সাকে।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দিবাগত রাতে স্তাদি অলিম্পিক লুইস কোম্পানিসে শুরুটা ছিল বার্সার পক্ষেই। তবে কাতালান ক্লাবটির বিপক্ষে পিছিয়ে পড়েও ৪–১ ব্যবধানে জয় পেয়েছে পিএসজি।
এ জয়ে দুই লেগ মিলিয়ে ৬–৪ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে সেমিফাইনালে পৌঁছে গেল লুইস এনরিকের দল। বিদায় নিতে হলো জাভি হার্নান্দেজের বার্সাকে। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে পিএসজি প্রতিপক্ষ জার্মান ক্লাব বরুসিয়া ডর্টমুন্ড।
ম্যাচের ১২ মিনিটে রাফিনহার গোলে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। লামিনের ইয়ামালের ক্ষিপ্রতায় পিএসজির জাল কাঁপান ব্রাজিলিয়ান এই ফরোয়ার্ড।
কিছুক্ষণ পর ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ এসেছিল বার্সার। রবার্ট লেভানডোভস্কির শট ক্রসবারের ওপর দিয়ে যায়। তারপর দুর্দান্ত ক্ষিপ্রতায় ডানদিকে ঝাঁপিয়ে কিলিয়ান এমবাপ্পের শট ঠেকিয়ে বার্সা শিবিরে স্বস্তি এনে দেন গোলকিপার মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগেন।
ম্যাচের লাগাম তখন পর্যন্ত বার্সেলোনার কাছেই ছিল। ২৯ মিনিটেই ঘটে বিপত্তি। পিএসজির ব্রাডলি বারকোলাকে ফাউল করে সরাসরি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় রোনাল্ড আরাউহোকে। ১০ জনের দলে পরিণত হওয়া দলটার কাছ থেকে ছুটে যেতে শুরু করে ম্যাচটা। ৪০ মিনিটে সমতা ফেরান সদ্যই বার্সা থেকে পিএসজি যাওয়া উসমান ডেম্বেলে।
নিষেধাজ্ঞার কারণে প্রথম লেগে খেলতে না পারা আশরাফ হাকিমি আজ দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ঝলক দেখান। ম্যাচের ৫৪ মিনিটে হাকিমির কাছ থেকে বল পেয়েই পিএসজিকে এগিয়ে দেন ভিতিনিয়া।
এর কিছুক্ষণ পর অনর্থকভাবে ডেম্বেলেকে ট্যাকল করে ফেলে দেন তিনি। রেফারি বাজান পেনাল্টির বাঁশি। ৬১ মিনিটে এমবাপ্পে পেনাল্টি থেকে ডান পায়ের উঁচু শটে গোল করেন।
একে তো দল পিছিয়ে পড়েছিল, তার ওপর দলের খেলোয়াড়দের একের পর এক কার্ড! রেফারিং নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে বার্সা কোচ জাভি চতুর্থ অফিশিয়ালের সামনেই একটি বিজ্ঞাপনী বোর্ডে লাথি মেরে বসেন। এ ঘটনায় জাভিকে লাল কার্ড দেখিয়ে ডাগআউট থেকে তাড়িয়ে দেন রেফারি কোভাকস। প্রতিবাদ জানাতে গেলে লাল কার্ড দেখতে হয় বার্সার গোলকিপার কোচ দে লা ফুয়েন্তেকেও।
সুযোগ এসেছিল বার্সার সামনেও। তবে একবার তাদের বঞ্চিত করেছেন রেফারি। আরেকবার নিজেরাই পারেনি।
৬৪ মিনিটে গুন্দোয়ানকে ফাউল করেন ভিতিনহা। রেফারি ভিএআর চেক পর্যন্ত করেছিলেন। কিন্তু সেখান থেকেও নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন রোমানিয়ার রেফারি ইস্তভান কোভাকস। আর ৭৩ মিনিটে বার্সা স্ট্রাইকার রবার্ট লেভানডফস্কি নিজেই ব্যর্থ হয়েছেন গোলরক্ষক ডোনারুম্মাকে পরাস্ত করতে। ফিরতি বলে ফেরান তরেসও ব্যর্থ হয়েছেন।
৮৯ মিনিটে বার্সার কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন এমবাপ্পে। ৪-১ গোলে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়ে পিএসজি।